ছিনতাই চেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়। INDIA
ছিনতাই হয়েছে
গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এসআর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। এর পর গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে।
জলদস্যুদের উৎপাতের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ভারত মহাসাগরে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষীসহ জাহাজ চলাচলের নিয়ম। এছাড়া জাহাজের চারপাশে তারকাঁটার বেষ্টনী, হাইস্পিড ওয়াটারগানসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু দস্যুদের কবলে পড়া এমভি আবদুল্লাহতে এসব ব্যবস্থার কোনোটিই নেওয়া হয়নি।
বিনা বাধায় জাহাজের নিয়ন্ত্রণ
বিশ্লেষকরা বলছেন, কয়লাবোঝাই জাহাজটির পানির ওপরের অংশের উচ্চতা কম হওয়ায় খুব সহজেই এটিতে চড়ে বসে দস্যুরা। যার ফলে অনেকটা বিনা বাধায় জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।
ভারতীয় নৌবাহিনী সোমালিয়ার জলদস্যুদের ছিনতাই করা পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি রুয়েন’ থেকে ১৭ নাবিককে উদ্ধার করেছে। ওই সময় ৩৫ জলদস্যু আত্মসমর্পণও করেছে। শনিবার ভারতীয় নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। খবর এনডিটিভির।
কলকাতা এমভি রুয়েনের
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪০ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা এমভি রুয়েনের মাধ্যমে জলদস্যুদের ছিনতাইচেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়। এটি ভারতীয় উপকূল থেকে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে নোঙর করা ছিল। এই অভিযানে আইএনএস সুভদ্র নামের আরেকটি জাহাজের ভারতীয় জাহাজও অংশ নেয়।
মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, মাল্টার পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েনে থাকা ৩৫ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। আর জাহাজটি অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং মাদক রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়েছে।
কার্গো জাহাজ
এই জাহাজটি গত ডিসেম্বরে ছিনতাই করে সোমালি জলদস্যুরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে সোমালিয়ার উপকূলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী যে কার্গো জাহাজ ছিনতাই করা হয়েছে, তার জন্য এ জাহাজটিকে জলদস্যুরা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে থাকতে পারে।
নতুন করে আলোচনায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এবার ভারত মহাসাগরে তাদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশের জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল।
জলদস্যুদের
জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন। গ্রুপটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেড এই জাহাজ পরিচালনা করছিল। জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিক এখন জলদস্যুদের হাতে জিম্মি।
এবারই প্রথম নয়, এর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ ‘এমভি জাহান মনি’ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তিন মাসের মাথায় মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ছাড়িয়ে এনেছিল কবির গ্রুপ।
সোমালিয়ার উপকূল–সংলগ্ন সমুদ্রপথ বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট। অ্যাডেন উপসাগরের এক উপকূলে ইয়েমেন। অন্য উপকূলে সোমালিয়া, জিবুতি, ইরিত্রিয়া। বিশ্ববাণিজ্যের বড় একটা অংশ এই জলপথে হয়ে থাকে। তাই এ অঞ্চলে জলদস্যুদের উৎপাত ভাবিয়ে তোলে পুরো বিশ্বকে। ২০১০-১১ সালের দিকে মাত্রা ছাড়ায় জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য। জাতিসংঘের আওতাধীন আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থার (আইএমও) তথ্যমতে, আগের বছরের তুলনায় ২০১০ সালে জলদস্যুতা ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল।
সরকারের পতন হয়
গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিককার কথা। তখন ভারত মহাসাগরে আফ্রিকার উপকূলে সোমালিয়ার জলদস্যুদের প্রভাব ক্রমেই বাড়তে শুরু করে। দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের পর ১৯৯১ সালে সোমালিয়ায় তৎকালীন সরকারের পতন হয়। দেশটি চরম অরাজক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। এ সুযোগে জলদস্যুতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।