আয়ের একাধিক রাস্তা খুঁজুন, ধনী হতে চাইলে মেনে চলুন। BOROLOK
আয় বাড়ানোর জন্য আপনাকে আগে লক্ষ্য স্থির করতে হবে। আপনাকে আগে জানতে হবে, কোন কাজ আপনার ভালো লাগে। চাকরি বা ব্যবসা যেটা ভালো লাগে তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। আপনাকে আপনার কাজে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
বুদ্ধিহীন গাঁধার খাটুনি
স্কুলে আমরা শিখেছি যে, যে যত পরিশ্রম করে জীবনে সে তত এগিয়ে যায়। ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি’ এই ভাবসম্প্রসারণের সঙ্গে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। রিক এডেলম্যান নামের একজন ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজারের মতে, ‘স্কুল জীবনের এই উপদেশগুলো পরিপূর্ণ না, বাকী অর্ধেক স্কুল থেকে শেখা সম্ভব হয়নি, বাস্তব জীবনে শুধু বেশি বেশি পরিশ্রম করলেই ধনী হওয়া যায় না অর্থাৎ গায়ে খাটলেই ধনী হওয়া যায় না।’ এডেলম্যানের মতে, ধনী হওয়ার জন্য পরিশ্রম করার পাশাপাশি আপনাকে জানতে হবে, কিভাবে কাজ করলে ভালো মানের ফসল দ্রুত ঘরে তোলা যাবে অর্থাৎ পরিশ্রম করার প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের বুদ্ধিকেও কাজে লাগাতে হবে। জায়গা বুঝে টাকা বিনিয়োগ করাও স্মার্ট (বুদ্ধিদীপ্ত পরিশ্রম) কাজের উদাহরণ বলে তিনি মনে করেন। তিনি পরামর্শ দেন যে, আপনার টাকা এবং ধন সম্পদ বাড়ানোর জন্য শেয়ার বাজার অথবা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন। এতে তেমন ঝুঁকি নেই, বেশি পরিশ্রম বা সময়েরও প্রয়োজন নেই।
খরচ করার পর বাকী অংশ সঞ্চয় না করা
আপনি যদি ধনী হতে চান, তাহলে প্রথম সুযোগেই নিজেকে পুরস্কৃত করুন। ডেভিড ব্যাচ নামের একজন মিলিওনিয়ার তার ‘দ্য অটোমেটিক মিলিওনিয়ার’ বইয়ে উল্লেখ করেন, ‘বেশির ভাগ মানুষই পারিশ্রমিক বা লভ্যাংশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনজন ও অন্যান্য পরিচিতদের জন্য কেনাকাটা করে, তারপর বাড়ি ভাড়া, ক্রেডিট কার্ড বিল, টেলিফোন বিল ইত্যাদি ইত্যাদি।’ সব বিল পরিশোধ করে যা থাকে তাই সঞ্চয় না করে বরং সঞ্চয় করার পর অবশিষ্টাংশ খরচ করুন। অথবা খরচের বাজেট করে প্রথমেই সঞ্চয় নিশ্চিত করুন। ব্যাচ বলেন, ‘প্রতিদিনের এক ঘণ্টার উপার্জন জরুরি প্রয়োজনের জন্য রাখুন এবং এই অভ্যাসটি চালু রাখা উচিত।’ এই ধরনের সঞ্চয়ের জন্য নিজেকেই উদ্যোগী হয়ে খেয়াল রাখতে হবে যেন সঞ্চয়ের পরিমাণ ক্রমাগতহারে বাড়তে থাকে।
বিশ্বাস- ধনসম্পদ আপনার ভাগ্যে নেই
সিবোল্ড বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করে যে, ভাগ্যে না থাকলে ধনী হওয়া যায় না, তবে আসল সত্য হলো, আপনি যদি পুঁজিবাদী দেশের নাগরিক হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি কোনো বিনিময়যোগ্য ‘সেবা’ দেয়ার সামর্থ্য থাকে তাহলেই আপনার পূর্ণ অধিকার আছে ধনী হওয়ার। সুতরাং আজ থেকেই নিজেকে প্রশ্ন করা শুরু করুন, কেন আপনি ধনী হতে পারবেন না?’ আর বড় বড় চিন্তা করা শুরু করুন, ধনবান ব্যক্তিরা সব সময় বড় লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান আর সেই অনুসারে চিন্তাগুলোকে আবর্তিত করেন।
আয়ের একাধিক রাস্তা খুঁজুন
অর্থ উপার্জনের জন্য শুধু একটি নির্দিষ্ট কাজকে প্রাধান্য দেবেন না। ধরুন, চাকরির পাশাপাশি ছোটখাট ব্যবসা শুরু করুন। যা আপনাকে আরও উপার্জনে সহায়তা করবে।
উচ্চকাঙ্খী মানুষের সঙ্গে আড্ডা দিন
উচ্চাকাঙ্খী মানুষদের সঙ্গে মেলামেশা করুন। এতে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। ফলে লক্ষ্য পূরে আরও এগিয়ে যেতে পারবেন।
বড় বিষয় নিয়ে চিন্তা করুন
ছোটখাট বিষয় নিয়ে চিন্তা না করে বরং সব সময় বড় বিষয় নিয়ে ভাবুন। আপনার স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে কী কী করণীয় সে বিষয়ে চিন্তার পরিধি আরও বাড়ান।
বিনিয়োগ করুন
বিভিন্ন খাতে অর্থ বিনিয়োগ করার মাধ্যমেও আপনি ভবিষ্যতে অর্থ সঞ্চয় করতে পারবেন। যা এক সময় আপনার ধনী হওয়া স্বপ্ন পূরণ করবে। যদিও বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকে লস হওয়ার, তবে সাফল্য পেতে হলে তো ঝুঁকি একটু নিতেই হবে!
মিতব্যায়ী হন
অর্থ সঞ্চয়ের একমাত্র উপায় হলো মিলব্যায়ীতা। আপনি যতটা বুঝে শুনে কম খরচ করতে পারবেন, ততই অর্থ জমাতে পারবেন। তাই বাজেট করে চলুন। বিশ্বের যত ধনী ব্যক্তি আছেন, তারাও প্রয়োজন ছাড়া বেশি অর্থ ব্যায়ে বিশ্বাসী নন।
সকালে ঘুম থেকে উঠুন
ধনী হতে চাইলে জীবনধারাও সঠিক ও সুস্থ রাখতে হবে। এজন্য সকালে ঘুম থেকে উঠুন দ্রুত, এরপর করুন শরীরচর্চা। মনে রাখবেন, সুষ্ঠু জীবনযাত্রার মাধ্যমে আপনি যেমন শরীরকে সুস্থ রাখতে পারবেন, ঠিক তেমনই মনকেও লক্ষ্য পূরণে কাজ করার জন্য উৎসাহী করতে পারবেন।
লক্ষ্য নির্দিষ্ট করুন
ধনী হওয়ার স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য নির্দিষ্ট করুন। আর সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যান নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে। আপনার লক্ষ্য যতটা বাস্তবাদী হবে, ততটাই আপনি সফলতার পথে এগিয়ে যাবেন।
ঋণ পরিশোধ করুন
ধনী ব্যক্তিরাও তাদের ঋণ পরিশোধের বিষয়ে খুব সতর্ক থাকেন। যত দ্রুত সম্ভব ঋণের বোঝা হালকা করুন। না হলে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।
আরাম-আয়েশ ত্যাগ করুন
ধনী হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধনী ব্যক্তিরা সর্বদা কাজ নিয়ে ভাবেন, এজন্য তারা আরাম-আয়েশের জীবন পছন্দ করেন না।